জ্বর হলে প্রাথমিক চিকিৎসা ও করণীয়
জ্বর বিভিন্ন অসুস্থতা এবং সংক্রমণের একটি সাধারণ উপসর্গ। যদিও জ্বরের প্রাথমিক চিকিৎসা অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করতে পারে, তবে এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে জ্বরের অন্তর্নিহিত কারণের চিকিৎসা করা অপরিহার্য। এখানে বিবেচনা করার জন্য কিছু সাধারণ প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে:
জলয়োজিত থাকার:
হাইড্রেটেড থাকার জন্য প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন, যেমন জল, ভেষজ চা বা পরিষ্কার ঝোল। এটি ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধে সাহায্য করে, বিশেষ করে যদি জ্বরের সাথে ঘাম হয়।
বিশ্রাম:
আপনার শরীর পুনরুদ্ধার/ সুস্থতার জন্য প্রচুর বিশ্রাম করুন। আপনার শরীরের তাপমাত্রা বাড়াতে পারে এমন কঠোর কার্যকলাপ এড়িয়ে চলুন।
কুল কম্প্রেস:
আপনার কপাল, ঘাড় বা কব্জিতে একটি শীতল কম্প্রেস ব্যবহার করুন। এটি শরীরের তাপমাত্রা কমাতে এবং স্বস্তি প্রদান করতে সাহায্য করতে পারে। খুব ঠান্ডা কম্প্রেস ব্যবহার এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি কাঁপুনি সৃষ্টি করতে পারে এবং শরীরের তাপমাত্রা বাড়াতে পারে। আরোও
আরামদায়ক পোশাক:
হালকা এবং শ্বাস নিতে পারে এমন পোশাক পরুন। ভারী পোশাক এড়িয়ে চলুন.
কক্ষের তাপমাত্রা :
ঘরটি আরামদায়ক তাপমাত্রায় রাখুন। প্রচন্ড গরম বা ঠান্ডা এড়িয়ে চলুন।
মেডিক্যাল এটেনশন নিন:
যদি জ্বর ক্রমাগত, গুরুতর হয় বা অন্যান্য লক্ষণগুলির সাথে থাকে, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসার সাহায্য নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
First aid for fever
লক্ষণগুলি পর্যবেক্ষণ করুন:
জ্বরের তাপমাত্রা সহ আপনার উপসর্গগুলি ট্র্যাক করুন এবং যে কোনও পরিবর্তন নোট করুন। এই তথ্য স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের জন্য সহায়ক হতে পারে যদি আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন হয়।
মনে রাখবেন যে জ্বর প্রায়শই একটি লক্ষণ যে আপনার শরীর একটি সংক্রমণ বা অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। যদি জ্বর অব্যাহত থাকে, অস্বাভাবিকভাবে বেশি হয়, বা গুরুতর লক্ষণগুলির সাথে থাকে, তাহলে সঠিক রোগ নির্ণয় এবং উপযুক্ত চিকিত্সার জন্য একজন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারের সাথে পরামর্শ করা অপরিহার্য।
গা গরম মানেই জ্বর ???
অনেকে জ্বরকে গরম অনুভব করা বা শরীরে মালিশ করা বলে উল্লেখ করেন। অনেকেই বলেন, আমার সবসময় জ্বর থাকে। কেউ কেউ বলে জ্বর আছে, কিন্তু থার্মোমিটার ধরা পড়ে না! গরম লাগা মানেই জ্বর নয়। যদি শরীরের তাপমাত্রা 101 ডিগ্রি ফারেনহাইটের উপরে না যায় তবে এটিকে জ্বর বলা ঠিক নয়। জ্বর দূর করার জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগে বাড়িতে থার্মোমিটার দিয়ে কয়েকবার জ্বর পরিমাপ করুন।আরোও
জ্বর মানেই খারাপ কিছু ???
জ্বর হল জীবাণু বা খারাপ কিছুর বিরুদ্ধে শরীরের প্রথম প্রতিরক্ষা। তাই জ্বর খারাপ কিছু নয়। অনেক ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং বিভিন্ন ধরনের জীবাণু প্রতিনিয়ত আমাদের আক্রমণ করছে। এটি মোকাবেলার প্রথম পদক্ষেপ হল জ্বর। তাই জ্বর নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
First aid for fever
জ্বর ওঠামাত্র নামিয়ে ফেলতে হবে ???
অনেকে মনে করেন, বেশি জ্বর থাকা ভালো নয়, আবার বেশিক্ষণ থাকাটাও ভালো নয়। এই ধারণারও কোন ভিত্তি নেই যে একবার জ্বর 101 ডিগ্রির উপরে উঠলে, জ্বর যে কোনও উপায়ে নামিয়ে আনতে হবে, অন্যথায় এটি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। বেশিরভাগ জ্বর কয়েক ঘন্টার জন্য আসে, তারপর কিছুক্ষণ পরে কমে যায়। খুব কম জ্বর থাকে। এটা কারণের উপর নির্ভর করে। আর জ্বর যেহেতু অস্বস্তি ও অস্বস্তি সৃষ্টি করে, তাই জ্বর নামিয়ে আনতে হবে, কিছু না করলে ক্ষতি নেই।
জ্বরের জন্য চাই আলাদা পথ্য ???
একসময় জ্বর হলে রোগীকে আলাদা পথ্য দেওয়া হতো। এখনো অনেকে রোগীকে স্যুপ, জাউ ইত্যাদি দিয়ে থাকেন। আসলে জ্বরের জন্য কোনো খাবার খেতে নিষেধ নেই। এমনকি ঠান্ডা খাবারও। বরং জ্বরের সময় যথেষ্ট পুষ্টিকর খাবার খাওয়া চাই। আরেকটা কথা, জ্বরের কারণে পানিশূন্যতা হয়। তাই পানি পান করতে হবে প্রচুর।
যতবার জ্বর, ততবার প্যারাসিটামল ???
প্রতিদিন প্যারাসিটামল দিয়ে জ্বর কমানোর চেষ্টা করার দরকার নেই। প্যারাসিটামল ওভারডোজ ক্ষতিকারক হতে পারে। অনেকে মনে করেন যে ওরাল পিলের ডোজ ঠিক করা থাকলেও সাপোজিটরির কোনো ডোজ নেই এবং যতবার ইচ্ছা ততবার দেওয়া যেতে পারে। এটাও ঠিক নয়। আরোও
First aid for fever
জ্বরের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক???
জ্বরের সংক্রমণ ভুলভাবে নির্ণয় করা হয়, এবং অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া চিকিৎসা অসম্পূর্ণ—এটাই সবচেয়ে বড় ভুল।নানা কারণেই জ্বর আসতে পারে। এর মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো ভূমিকা নেই। যেমন পাওয়ার ফিভার, ফ্লু, অ্যালার্জিজনিত জ্বর, ফুড পয়জনিং ইত্যাদি জ্বর হলে তার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।